মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
এনএমআই-এর স্পেশাল ব্যাচ-২০২৩ এর শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। কালের খবর আগুন পুড়ছে সুন্দরবন, নেভানোর আপ্রাণ চেষ্টা। কালের খবর জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক – শিপ্রা রানী দে। কালের খবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্যকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান তারুণ্যের অহংকার আবিদ হাসান রুবেল। কালের খবর কক্সবাজারে সাইফুল বাহিনীর প্রধান গ্রেপ্তার। কালের খবর তাড়াশে ইরি বোরো ধান কাটা শুরু। কালের খবর কাজ করতে গিয়ে বাড়িতে ফিরলো শ্রমিকের লাশ!। কালের খবর কুষ্টিয়ায় পানি সংকটে খাদ্য উৎপাদনে বিপর্যয়ের শঙ্কা। কালের খবর ডেমরায় ৬৭ নং ওয়ার্ডের মেহনতি মানুষের মাঝে খাবার পানি, স্যালাইন বিতরণ করেন জননেতা তৌফিকুর রহমান শাওন। কালের খবর যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে মামলা। কালের খবর
‘মুজিব বর্ষে’চোখ-মুখে তাদের উচ্ছ্বাস। কালের খবর

‘মুজিব বর্ষে’চোখ-মুখে তাদের উচ্ছ্বাস। কালের খবর

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, কালের খবর :

মালেকা, আমেনা, দুলালী, মঞ্জু, আবেজা, গোলাপী একে একে ২৩ জন নারী। এতদিন তাদের ঠিকানা ছিল গাছতলা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে, কোনো দোকান বা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় কিংবা অন্যের জায়গায় অস্থায়ী ছাপড়ায়। তারা এখন পেয়েছেন স্থায়ী আবাস। যেখানে কনকনে শীত, গ্রীষ্মের তাপদাহ বা বর্ষার অঝোর ধারা স্পর্শ করতে পারবে না।
গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রামের ওইসব ঘরহারা, হতদরিদ্র, বিধবা নারীর ঠিকানা এখন সরকারের দেওয়া স্বপ্ননীড়। এতদিন যা ছিল স্বপ্ন। সেই স্বপ্নই এখন তাদের হাতের মুঠোয়। অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে লাল-সবুজ রঙিন টিনের সেমিপাকা ঘরগুলোকে। একটি পুকুরকে ঘিরে চারপাশে গড়ে ওঠা রঙিন টিনের সেমিপাকা ঘরগুলো এলাকাকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে। সারিবদ্ধ ২৩টি ঘরে ঠাঁই পেয়েছেন ওই এলাকার গৃহহীন ২৩ নারী।
গত ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় নির্মিত ‘স্বপ্ননীড়’-এর চাবি পেয়েছেন ভূমিহীন-গৃহহীন আঞ্জুয়ারা বেগম। এখন তার স্থায়ী ঠিকানা গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের পচারবাজার এলাকার গুচ্ছগ্রামে। স্বপ্নের আপনালয়ের চাবি ও জমির দলিল হাতে পেলেও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এখনও গৃহপ্রবেশ হয়নি আঞ্জুয়ারাদের। ‘স্বপ্ননীড়’-এর কাজ প্রায় শেষদিকে অপেক্ষা শুধু নতুন বাড়িতে রঙের প্রলেপ দেওয়ার। গাইবান্ধা জেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন ১ হাজার ১২৬ পরিবার তাদের নতুন ঠিকানা স্বপ্ননীড়ে ওঠার আনন্দে এখন বিভোর। চোখ-মুখে তাদের উচ্ছ্বাস।
অভাব-অনটনের সংসারে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে নিজ বাড়ি বানানোর কথা শুধুই স্বপ্ন ছিল আঞ্জুয়ারার জীবনে। কিন্তু তার সেই স্বপ্নপূরণ করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই নয়, নিজের নামে দুই শতক জমিও পেলেন আঞ্জুয়ারা। নিজের নামে জমির দলিল ও ঘরের কাগজ পেয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে তার চোখ-মুখে যেন আলোর রোশনাই। নতুন পাওয়া ঘর ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে বললেন, আধাপাকা ঘরটি তার খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে রান্নাঘর। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো। বিদ্যুৎ নেই, তবে শিগগিরই সংযোগ পাবেন। দুই ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে এখন খুব ভালোভাবে থাকতে পারবেন। এখানে সবই আছে, নেই শুধু টিউবওয়েল। তাই বিশুদ্ধ খাবার পানির বন্দোবস্ত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আঞ্জুয়ারা। তার মতো গুচ্ছগ্রামের অন্যরাও এ নিয়ে চিন্তিত।
গৃহহীন ও ভূমিহীন এসব পরিবারের জন্য গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলায় ৮৪৬টি গৃহ নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ১০৫টি, সুন্দরগঞ্জে ২৭২টি, গোবিন্দগঞ্জে ১২০টি, সাদুল্লাপুরে ১৭৯টি, ফুলছড়িতে ৭৫টি, সাঘাটায় ৩৫টি ও পলাশবাড়ীতে ৬০টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় নবনির্মিত ৪টি ব্যারাকে ২৮০টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
নতুন ঘর পেয়ে উচ্ছ্বসিত ফুরকুন বেগম ও তার স্বামী রিকশাচালক ফেরদৌস মিয়া। এতদিন পরের জায়গায় পরের বাড়িতে থাকলেও এখন পেয়েছেন নিজের ঠিকানা। এখানেই বুনবেন জীবনের স্বপ্ন। সারা দিন কাজ শেষে আর পরের বাড়িতে নয় ফিরবেন স্বপ্নের আপনালয়ে। আধাপাকা সেই ঘরে সুন্দর বারান্দাসহ বসবাসের নিরাপদ সুবিধা নিয়ে নতুন জীবন শুরুর অপেক্ষায় এই ভূমিহীন ও গৃহহীন দম্পতি।
নতুন ঘর পেয়ে বিধবা মালেকা বেগম বলেন, ‘স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি, যে জমিসহ আধাপাকা নতুন ঘর পাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ঘর উপহার দিয়েছেন। এখন থেকে আমি পাকা ঘরে থাকতে পারব। আমি ভীষণ খুশি ঘর পেয়ে। অনেক দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।
আঞ্জুয়ারা, মালেকা বেগম, আমেনা, দুলালী, মঞ্জু, আবেজা, গোলাপীর মতো একই এলাকায় স্বপ্নের বাড়ি পেয়েছে আরও ১৪টি গৃহহীন পরিবার। সবাই হাতে নতুন ঘরের চাবি ও কাগজ পেয়েছেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সবাই কৃতজ্ঞতা জানান। এখন অপেক্ষা গৃহপ্রবেশের।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com